অপরাজেয় ডেস্কঃ
“হুইলচেয়ারের জীবন যেন বন্ধ খাঁচায় পাখির মতন। ইচ্ছে করে উড়ে যেতে এখানে সেখানে কিন্তু হার মানতে হয় নিজের সীমাবদ্ধতার কাছে। তেমনি হাপিয়ে উঠেছিলাম শহরের এই কোলাহলপূর্র্ণ পরিবেশে”
আক্ষেপের সুরে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই কথাগুলো লিখেছিলেন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
এই দেশে চলন ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে নিজেকে চার দেয়ালের ভেতর আড়াল করতে হয়। সত্যি বলতে কি, নিজেকে আড়াল করতে বাধ্য হতে হয়। আর দশ জনের মত নিজের খেয়াল খুশীতে ঘর থেকে বের হতে চাইলেও উপায় থাকে না। নেই রাস্তায় নির্বিঘ্নে চলার স্বাধীনতা। নেই গণপরিবহনে প্রবেশের অধিকার। নগরের কোলাহল থেকে ক্ষণিকের রেহাই পেতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও যাওয়ার উপায় নেই প্রবেশগম্যতার অভাবে। যদি কোনভাবে পৌঁছানো যায় বাধ সাধেন কর্তৃপক্ষ। রাইড গুলোতে চড়তে মানা প্রতিবন্ধী মানুষের। তারা (কর্তৃপক্ষ) ঝুঁকি নিতে চান না। বিপুল উৎসাহ থাকা সত্ত্বেও বিরস মুখে ঘরে ফিরতে হয় কিংবা চেয়ে চেয়ে দেখতে হয় অন্যদের আনন্দ উদযাপন।
এমন শত না পাওয়ার মাঝেও কিছু কিছু ঘটনা আসলেই ভাল লাগার মতো। নরসিংদীর ড্রিমল্যান্ড হলিডে পার্ক তেমনি এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে হুইলচেয়ার প্রবেশগম্যতার সুবিধা রেখে। এখানে শুধু প্রতিবন্ধী মানুষেরাই নয় তাদের সাথের সহযোগির প্রবেশও বিনামূল্যে রাখা হয়েছে। এছাড়া পার্কের সকল রাইডের টিকেটও পাওয়া যাবে বিনামূল্যে। সম্প্রতি এ পার্কে ভ্রমণ করে আসা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী ব্যক্তি মুন্না আজিজ জানান, “চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে ও বিভিন্ন রাইডে চড়ে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। সেই সাথে মনে হয়েছে ভাল মানুষ আজও সমাজে আছে যারা প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ। ড্রিমল্যান্ড হলিডে পার্ক এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহাকে ধন্যবাদ জানাই চমৎকার এই পরিবেশে হুইলচেয়ার প্রবেশগম্যতা সহকারে এই পার্কটি পরিচালনার উদ্যোগ নেবার জন্য।