আমাদের দেশের মানুষ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সমাজের ‘বোঝা’ই ভেবে যায় কেবল। তারা কেন ‘বোঝা’ হয়ে আছে বা সমাজ ব্যবস্থাই যে তাদের সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠে প্রতিষ্ঠিত হবার পরিবেশ দিচ্ছে না তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। সময় হয়েছে সামাজিক সচেতনতাবোধ জাগিয়ে তুলে অ-প্রতিবন্ধী মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমই রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা। প্রতিবন্ধী মানুষ হিসেবে মূলধারার গণমাধ্যমগুলো যখন আমাদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ প্রায় সে সময় ত্রৈমাসিক অপরাজেয়র কথা জানতে পেরে আমার অনেক আনন্দ হয়েছিলো।
বি-স্ক্যান এমন একটি ভিন্নধর্মী প্রকাশনার উদ্যোগ নিয়েছে যেখানে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী মানুষের সাফল্য, এগিয়ে যাওয়ার পথের প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং বিভিন্ন সমস্যা সম্ভাবনাগুলো চমৎকার ভাবে উঠে আসে। তাছাড়া অনলাইন ভার্সনের কথা জেনে আমার খুব বেশি ভালো লেগেছে, যেহেতু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষও এটি পড়তে পারছে। প্রতিবন্ধী মানুষের একমাত্র মুখপাত্র ‘অপরাজেয়’ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে এবং সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণে এটি কার্যকরী ভ’মিকা রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস।
১ম বর্ষে পদার্পনে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে অপরাজেয়কে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
খোরশেদ আলম
সাধারণ সম্পাদক
ডিসঅ্যাবল্ড রাইটস্ অরগানাইজেশন অফ কিশোরগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট (ড্রোক) কিশোরগঞ্জ
বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘অপরাজেয়’ এর বর্ষপূর্তী উপলক্ষ্যে ‘কল্পনা উন্নয়ন প্রতিবন্ধী সংস্থার’ পক্ষ থেকে জানাই প্রানঢালা শুভেচ্ছা। রাজশাহী জেলার প্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাওয়া আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘কল্পনা উন্নয়ন প্রতিবন্ধী সংস্থা’। ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী থেকে নিবন্ধনকৃত প্রতিষ্ঠানটি জেলার প্রতিবন্ধী মানুষের চিকিৎসা, শিক্ষা, অধিকার আদায় ও স্বাবলম্বীকরনে কাজ করছে। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আমাদের কাজের পরিধি বাড়ে নি। এমতাবস্থায় এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) আমাদের সহায়ক উপকরন ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। বি-স্ক্যান এর সাহায্যে আমাদের বেশ কিছু নিবন্ধিত সদস্যদের বিনামূল্যে হুইলচেয়ার, ক্রাচ ও হিয়ারিং এইড দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বি-স্ক্যান আমাদের দশজন শ্রবন-প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য হিয়ারিং টেস্ট ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। বি-স্ক্যানকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। আমরা ভবিষ্যতেও এভাবেই বি-স্ক্যানকে আমাদের পাশে পাবো বলে আশা করছি। একি সাথে ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আদায়ে প্রতিবন্ধী মানুষের মুখপত্র এই পত্রিকাটি আরো বলিষ্ঠ কন্ঠ হিসেবে আত্বপ্রকাশ করবে এই শুভকামনা রইলো।
মোঃ সোহেল রানা,
সভাপতি,
কল্পনা উন্নয়ন প্রতিবন্ধী সংস্থা,রাজশাহী।
বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা সময়ে উঠে আসলেও তা ধারাবাহিক ও বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার সুযোগ রয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এনজিও প্রকল্পের অংশ হিসেবে নিউজ লেটার, সাময়িকি বা সুভ্যেনিয়র প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সুদূর প্রসারি লক্ষ্য নিয়ে নিয়মিত প্রকাশের ক্ষেত্রে উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। বিশেষত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত সংগঠনের দিক থেকে এই উদ্যোগ খুব কম। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে ‘অপরাজেয়’ প্রকাশের উদ্যোগ প্রশংসার দাবী রাখে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্যসমূহ প্রচারে বি-স্ক্যান এর মত নবীন সংগঠনের উদ্যোগ অনেকের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। ‘অপরাজেয়’ এর প্রথম বর্ষপূর্তির মধ্য দিয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রচারণায় একটি নতুন মাইল ফলক উন্মোচন করলো। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতিভা, কর্মক্ষমতা ও বিশেষ চাহিদা সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখছে। অপরাজেয় শিরোনামে প্রকাশিত এই ত্রৈমাসিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সন এবং মুদ্রিত কপি উভয় প্রক্রিয়ায় প্রকাশ করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। গণসচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই পত্রিকা কার্যকর প্রভাব সৃষ্টিতে সক্ষম হবে – এটাই আমার একান্ত প্রত্যাশা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুবিধা অসুবিধা তুলে ধরে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তনে অপরাজেয় – এর অব্যাহত সাফল্য কামনা করছি।
এ্যাডভোকেট মোঃ মোশাররফ হোসেন মজুমদার,
সভাপতি, বাংলাদেশ ভিজ্যুয়ালি ইমপেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি (ভিপস)
‘অপরাজেয়’ – একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা। প্রতিবন্ধিতা এবং প্রতিবন্ধী মানুষদের জীবন-যাপন, অধিকার, মর্যাদা, উন্নয়ন এবং সবার সক্রিয় অংশগ্রহণে একীভুত সমাজ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে ছোট পরিসরে পথ চলা শুরু করেছিলো ‘অপরাজেয়’। দেখতে দেখতে পার হয়ে গেলো একটি বছর। ‘অপরাজেয়’ যতটা পথ পাড়ি দেবে তা থেকেই নির্ধারিত হবে সে কতটা দূর যাবে।
পথ পরিক্রমার প্রথম বছরের প্রতিটি সংখ্যায় ‘অপরাজেয়’ আন্তরিকভাবে সচেষ্ট ছিলো এদেশের প্রতিবন্ধী মানুষের মৌলিক অধিকার, মর্যাদা, সমস্যা এবং সম্ভাবনার স্বরূপ উম্মোচনে। প্রতিবন্ধী মানুষের সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবি, সাফল্যগাথা দারুণ চমৎকার ভাবেই ফুটে উঠেছে এখানে। এমন একটি পত্রিকার দাবি, সময়ের বিবেচনায় অনস্বীকার্য।
১ম বর্ষে পদাপর্নে ‘অপরাজেয়’ এর পথ চলার সহযাত্রী সবাইকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। প্রতিবন্ধী মানুষদের স্বপ্ন এবং সাফল্যে বর্ণময় হয়ে উঠুক ‘অপরাজেয়’র প্রতিটা পাতা।
এম. ওসমান খালেদ, সভাপতি,
সোসাইটি অব দি ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাংঙ্গোয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)।