নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সঠিক ইশারা ভাষা রপ্ত না করে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্ত উপস্থাপক দ্বারা ইশারা ভাষায় সংবাদ উপস্থাপন করায় বিভ্রান্তিতে পড়ছেন দেশের ৩০ লাখ শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষেরা। এ নিয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কাজ হয় নি।
শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কর্মরত প্রতিষ্ঠান সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাক্সগুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল) জানায়, বিটিভির সংবাদে অনিমেষ কুমার দত্ত ও রিতা আক্তারের উপস্থাপন বিভ্রান্তিকর জানতে পেরে গত ডিসেম্বর’১৩ তে তৎকালীন বিটিভি মহাপরিচালকের নিকট লিখিত অভিযোগ জানানো সত্বেও ফেব্রুয়ারি-মার্চ’১৪ মাত্র দু’মাস তাদের শিডিউল বন্ধ রেখে এপ্রিল-মে’১৪ তে আবারও এই বিতর্কিত উপস্থাপকদের দিয়ে সংবাদ পরিবেশন শুরু হয়েছে।
এই দুই উপস্থাপকের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এসডিএসএল অভিযোগ করেছে, বাংলা ইশারা ভাষায় সম্পূর্ণ বাক্য গঠনও করতে পারেন না তারা। অডিশনের সময় শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও এই বিতর্কিত দুই উপস্থাপকের অডিশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিটিভি কর্তৃপক্ষ তাদের কিছুই জানান নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিভির এক কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি নিজেও দেখেছি তাদের উপস্থাপনে ভুল হয় কিন্তু উপরের মহলের চাপ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে কিছু করার থাকে না।
ইশারা ভাষার সংবাদ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এসডিএসএল এর সহযোগিতায় যথাযথ অডিশন নীতিমালা অনুসরণ করে বিটিভি কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও নিয়োগের যাবতীয় প্রক্রিয়া সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে এসডিএসএল এর একজন প্রতিনিধিকে নিয়োগ দেয়া হলেও উক্ত প্রতিনিধির অজান্তেই দু’সংবাদ কর্মীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বিটিভির এমন দায়িত্বহীন আচরণ শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের সাথে নির্মম মশকরার সামিল উল্লেখ করে এসডিএসএল সভাপতি এম ওসমান খালেদ বলেন, সঠিক সংবাদ উপস্থাপন রীতি এবং অডিশন প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ইশারা ভাষার সংবাদ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এধরনের অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হত না।
উল্লেখ্য, বিটিভি এবং স্যাটেলাইট চ্যানেল দেশটিভিতে বাংলা ইশারা ভাষায় সংবাদ উপস্থাপনের জন্য ইশারাভাষী ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ এবং সার্বিক তত্বাবধান করছে এসডিএসএল।