কামরুন্নাহার শম্পা (যশোর সংবাদাতা):
যশোর জেলার বিভিন্ন স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কোথাও প্রতিবন্ধী মানুষের সহজ প্রবেশাধিকার নেই। মূলধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করতে যেমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তেমনি উপজেলার স্টেডিয়ামগুলো এবং সমাজসেবা কার্যালয়গুলোও প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য সম্পূর্ণ প্রবেশগম্য নয়। কোটা নির্ধারিত থাকলেও প্রতিবন্ধী মানুষের চাকুরির উপযুক্ত পরিবেশ কোথাও নেই।
বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহজে ওঠানামার ব্যবস্থা নেই বলে অভিভাবকেরা দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। এতে যশোর জেলার প্রতিবন্ধী মানুষের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে। লেখাপড়া থেকে পিছিয়ে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সামাজিক সম্মানটুকুও মিলছে না তাদের। পারছেন না বিনোদনমূলক কোন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার অবস্থাও একই রকম। স্থানীয় প্রতিবন্ধী মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে তাদের অধিকার রক্ষায় কর্মরত সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়গুলোতে প্রবেশ সমস্যায় ভুক্তভোগী হয়ে। সরকারি অফিসের বেহাল দশা হলে তারা কার কাছে যাবেন এমন মন্তব্য করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় নারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
এদিকে মনিরামপুর উপজেলার হুগলাডাঙ্গা গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মোঃ মামুন হোসেন একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজ হচ্ছে না কিছুই। হুগলাডাঙ্গা গ্রামের মেম্বারের কাছে এ বিষয়ে যতবারই ধরনা দিতে গিয়েছেন তিনি প্রতিবারই জানিয়েছেন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার দরুন কার্ডের কথা ভুলে যান বারেবারে। পরে দেখা করার কথা বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন তাও অনেক দিন। মামুন হোসেন চেয়ারম্যানের সাথেও দেখা করেন এবং সেখানেও একই ব্যবহার। চেয়ারম্যান তাকে এমনও বলেছেন প্রতিবন্ধী কার্ড এখনো আসেনি, এলে তাকে ডাকা হবে। দুই বছর হয়রানির স্বীকার হবার পরে মামুনের মনে অসংখ্য প্রশ্নের ঝড়; তবে কি গত দুবছরে সরকার প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড ছাড়েন নি? সংসদে পাশ হওয়া বিল কি কাগজের ফাইলেই আবদ্ধ হয়ে আছে?
সরকারের প্রতি বছরের আয়-ব্যয়ের বাজেটে প্রতিবন্ধী মানুষের জন্যেও বাজেট বরাদ্দ হয়ে থাকে যেখানে বাদ পড়ে না প্রতিবন্ধী মানুষের ভাতার বাজেটও। সংসদে বিল পাশ হয় প্রতিবন্ধী ভাতার মাথাপিছু পাঁচশত টাকা করে। কতজন এই ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আর বরাদ্দকৃত এই অর্থের সুষম বন্টন নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে জনমনে।