বৃষ্টি চৌধুরী
-এই যে শুনছেন?
-উম্ম্…
-উহুঁ, এসব উম-আম চলবে না, একটু উঠুন তো
-হুম্ম্, এই তো আরেকটু…
-বড্ড জ্বালান! উঠুন, না হলে পানিতে ভিজিয়ে দেবো বলছি
-উফ্…এই রাত ভোরে কী শুরু করলেন!
-যা ইচ্ছা তাই…এক্ষুনি উঠুন বলছি। দেখুন না,
কী অদ্ভুত সুন্দর মেঘরঙা আকাশ! বারান্দায় যাবো
-গেলেই হয়। আমায় নিয়ে কেন টানাটানি!
-আহ্হা, আসুন না! প্লিজ… প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লি-ই-ই-জ
-সব সময় আহ্লাদিপনা ভাল্লাগে না, হুম্ম্।।
-এঃ! আপনার ভালো লাগার থোড়াই কেয়ার করি আমি
-আচ্ছা বাবা, আগে একটু উপুড় হয়ে ওম নেই…
-অত শত বুঝি না। বলেছি যেতে হবে, এক্ষুনিই যেতে হবে।
ব্যস! কথা শেষ। ফাইনাল।
==================================
-আজ আমার আকাশ মেঘরঙা শাড়িতে জড়িয়েছে নিজেকে। আমিও…
দু’হাত ভর্তি চুড়ি আর ছোট্ট টিপ, আচ্ছা কী টিপ পরি, হুম্ম্?
-যা ইচ্ছে…
-আচ্ছা, এই তবে কথা
-কী?!
-বলুন তবে বৃষ্টির রিমঝিম নাকি স্পর্শ, কোনটি বেশি মধুময়
-এই নিয়ে হাজারের ওপর হতে চললো আর কতো?!!
-আরো হাজার বার। লক্ষ বার।
অযুত নিযুত আরো আরো আরো…আরে আরে এসব কী হচ্ছে
-কেমন লাগছে এখন??
-উম্ম্… বর্ণনাতীত
-উহুঁ…শুনবো।।
-ইশ্! নিজে যে এখন আহ্লাদি শুরু করেছেন
-করবো।।
-এঃ! শখ কত্তো
-হু শখ, তো!
-উম্ম্ন্না… সরুন তো
-উহুঁ যাবো না
-আহ্হা যান বলছি, যান
-হু, তাই-ই তো…
-অসভ্য
================================
-আসছি তো বাবা…
-হুম্ম্, দেরি হচ্ছে। জলদি, হাতে ওটা কী?
-আহ্! এতো প্রশ্ন করে রে…
আমাকে ধরুন তো, একা কীভাবে রিকশায় উঠি!
-আমার হাত ধরে আর কতো…নিজেরও তো কিছু শিখতে হবে।
-লেকচার বন্ধ করে এটা ধরুন তো দেখি…
-এমা! এসব কী হচ্ছে এখানে!!
-মোমবাতিটা কেমন মায়াবী না! অনেক ঘুরে তবেই এটা পেয়েছি
-এই পিচ্চি কেক আপনি বানিয়েছেন!
-এই রূপোলী ছুরিটাও আমার খুব পছন্দ…
-এখানে পিচ্চি পিচ্চি লেখাগুলোও আপনার!!
-মোমটা যে নিভে যাচ্ছে, দু’হাতে বাতাস আগলে রাখুন…
-এই কান্ড জীবনে দেখিনি!!
-এই যে, মাত্র দেখলেন…
এখন বকর বকর বন্ধ করে মোমবাতিটা নেভান তো!
-এই চলন্ত রিকশায়!!!
-চোখ বেরিয়ে যাবে এমন করলে…
=================================
-কী নির্জন আজকের দুপুরটা, তাই না!
-গনগনে রোদ্দুরের আঁচ দেখে কে বলবে
সক্কালবেলায় আকাশটা কাঁপিয়ে গেলো!
-স্রষ্টা ইচ্ছে করেই করেছেন এমন।
-মানে?!
-আজকের দুপুরটা শুধু আপনার!
-উহুঁ…আমাদের!
-হু…
-কই যাচ্ছি আমরা?
-পাহাড় আর নদী যেখানে মিশেছে..সেই প্রকৃতির কাছে।
-আজ সমস্তই তবে আমার…
-আজ আমরা পাহাড় হবো।
-উহুঁ, আজ আমি রোদ্দুর হবো…
সেই রোদ্দুরে আমরা পাহাড় হবো।
-তবে আমি রোদ্দুরের ছায়া হবো। মেঘ…
-মেঘের মায়ায় আমি ওম নেবো
-রোদ্দুরের প্রখর উত্তাপেই তো মেঘের জন্ম!
-হুম্ম্, মেঘ মানে রোদ্দুর। রোদ্দুর মানেই মেঘ।
-একের জন্যই অপরের বেঁচে থাকা।
-মহাকাশের বুকজুড়ে মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা।