বাংলাদেশ বধির ক্রীড়া ফেডারেশনের আয়োজনে গত ২১-২৬ মে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সার্ক আন্তর্জাতিক শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দাবা প্রতিযোগিতা। এতে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ সার্ক ভুক্ত দেশের মধ্যে অংশ নিয়েছিল পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের শ্রবণ প্রতিবন্ধী দাবাড়ুগণ।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটির কার্যকরী পরিষদের তিনজন অ-প্রতিবন্ধী মানুষ ছাড়া সকলেই শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষ এবং তাদেরই প্রাণবন্ত ইচ্ছেতে আয়োজনটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
ফেডারেশনের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিযোগিদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সরকারি বেসরকারি কোন রকম সহযোগিতাই ফেডারেশন পায় নি, অথচ দেশে অসংখ্য বিত্তবান মানুষ থাকলেও সহৃদয়বান মানুষের সংখ্যা একেবারেই কম বলে আফসোস করছিলেন সদস্যরা। তারপরও ফেডারেশন তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে এবং সফল হয়েছে এতেই তারা আনন্দিত।
ছয়দিন ব্যাপী এই আয়োজনে পুরুষ মহিলা উভয় বিভাগেই অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। পুরুষ বিভাগে বাংলাদেশের ওবায়দুল ইসলাম শাহীন এবং মহিলা বিভাগে সোনিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন হন। পুরস্কার পাওয়ার পর দোভাষী কারিশমা জাহিদের মাধ্যমে ওবায়দুল বলেন, কথা বলতে পারি না বলে অনেকেই আমাদের অবহেলার চোখে দেখেন। সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে আমরাও জাতীয়সহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্যে সুনাম বয়ে আনতে পারব বলেই আমাদের বিশ্বাস।
সোনিয়া বলেন, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রতিযোগিতার জন্য নিজেদের আরও প্রস্তুত করতে হবে আমাদের। এবার চ্যাম্পিয়ন হলেও আমি চাই আরও পাকাপোক্ত হয়ে অংশগ্রহণ করতে।
বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন বধির দাবা ফেডারেশনের সভাপতি জাকির হোসেন খান। আরও উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি ও কনভেনার গাজী কামরুল হাসান, সাধারন সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ ও যুগ্ন সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সভাপতি জাকির হোসেন খান বলেন, সার্কের পাঁচ দেশের সাথে বৈঠক করে সার্ক ডেফ স্পোর্টস কাউন্সিল গঠিত হয়। যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়ন করা হবে। যুগ্ন সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ বধির ক্রীড়া ফেডারেশনের উন্নয়ন সম্পর্কে বলেন, শ্রবণ প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়রা দাবা সহ ফুটবল, ক্রিকেট ও অন্যান্য খেলায় যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করছে। যথাযথ সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে নিজেদের দেশসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুনাম বয়ে আনতে সক্ষম হবে তারা। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে দোভাষীর দায়িত্ব পালন করেন বদরুন্নাহার তমা।